চুয়াডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জ রেল স্টেশনের প্রায় কোটি টাকার জমি দখল করে বিক্রির পায়তারা করছে একটি চক্র। স্থানীয়রা বলছেন, রেলের জমি রকিব উদ্দিনরা লিজ নেয়। পরে ৬৪ সালে সিএস থেকে এস এ রেকর্ড করার সময় রকিব উদ্দিনরা রেকর্ড কালেকটরদের সাথে কন্টাক করে নিজেদের নামে জমিটি করে নেয়। যা গোপন থাকে। গতবছর হঠাৎ করে পত্রিকায় জমি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেয়ায় বিষয়টি সকলের দৃষ্টিগোচর হয়। ওই জমির উপরে থাকা স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরকে উচ্ছেদের নোটিশ দিলে তারা রেল কর্তৃপে দৃষ্টি আকর্ষন করেন। হয় মামলা। এখন দুই পরে মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। চুয়াডাঙ্গা থেকে মরিয়ম শেলীর রিপোর্ট।
প্যাকেজ:
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ স্টেশনের পাশে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। স্টেশনের দণি পাশেও রয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ¯^াধীনতার পর থেকেই দেিণর এই ব্যবসায়ীরা জানতেন রকিব উদ্দিনরা রেলের কাছ থেকে দেিণর দাগ নং ৩০’র ১৪ শতক, ৩১’র ৪১ শতক, ৬৬’র ৩৬ শতক এবং ৬৭’র ৩৪ শতক মোট এক একর ২৫ শতক জমি লিজ নিয়েছেন। আর সে জমিতে তারা রকিবদের ভাড়াটিয়া। এরই মাঝে গত ২৪ অক্টবর স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক মাথাভাঙ্গায় এই জমি বিক্রির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। তাদেরকে উচ্ছেদের নোটিশ দেয়া হয়। ব্যবসায়িদের মাথায় বাজ পরে। দলিল পত্র পরীা করে তারা নিশ্চিত হয় যে রেলের জমির উপরে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠন। ছোটেন রেলের পাকশি এবং রাজশাহির অফিসগুলোতে। গড়িমশির মাধ্যমে মামলা করে রেল কর্তৃপ। রক্তয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা তাদের।
ভক্সপপ: মোঃ আব্দুলা, স্থানীয় ব্যবসায়ী।
আমরা জানতাম রেলের জমি ওনাদের ৯৯ বছর লিজ নেয়া সম্পদ। যখন পত্রিকায় জমি বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দেয়। ......
শুধু পত্রিকায় জমি বিক্রির বিজ্ঞপ্তি নয়। সাইনবোর্ডও টাঙ্গানো সেখানে।
ভক্সপপ:মনসুর আলী, স্থানীয় ব্যবসায়ী
৩০ বছর যাবত আমি এখানে ব্যবসা করছি। ওদেরকে ভাড়া দিতাম। এখন মামলা হওয়ায় আর ভাড়া দিই না। জমি বিক্রির জন্য সাইনবোর্ডও টাঙ্গিয়েছিলো।
হীরা লালের ৩৬ বছরের জীবনে দেখেছেন রকিব উদ্দিনরা যে জমির দাবি করছেন সেই জমির উপর মিটার গেজ লাইন দিয়ে ছুটে যেতো বাংলাদেশ রেলওয়ের কয়লার ইঞ্জিনগুলো। তিনি মনে করেন রেল ও.রেকর্ড কালেকটরদের যোগসায্যুশে রকিব উদ্দিনরা জমিটি আজ নিজেদের বলে দাবি করছেন।
ভক্সপপ: বাবু হিরালাল, স্থানীয় বাসিন্দা।
আমারা ছোট বেলা থেকেই এইখানেই দেখেছি বাংলাদেশ রেলওয়ের মিটার গেজ লাইন ছিলো। কয়লার ইঞ্জিনগুলো এই লাইনের উপর দিয়ে চলতো। ইনডিয়া থেকে আসতো। লাইন ছিলো। রোকোন মিয়া যারা এখন এই সম্পদ দাবি করছে তারা রেলের কাছ থেকে লিজ ছিলো। ৬৪ সালে যখন সিএস থেকে এস এ রেকর্ড হয় তখন যেহেতু ওদের রেলের জমির পাশে তাদের নিজের জমি আছে। তখন রেকর্ড কালেকটরদের সাথে একটা কন্টাক করে নিজেদের নামে করে নিয়েছে।
¯^াধীনতার পর থেকে চৌকিরি বাবুদের ব্যবসা মুন্সিগঞ্জ রেল স্টেশনের দেিণ। নিজের খরচে দোকান তৈরি করলেও তারা রকিব উদ্দিনদের কাছে ভাড়ার টাকা পরিশোধ করতেন। তাছাড়া পতিত জমিতে তিনি আবাদও করে আছছেন দীর্ঘ সময় ধরে। তবে হঠাৎ করে রেলের জমি তাদের ব্যক্তি সম্পত্তি দাবি করা এবং জমি বিক্রির জন্য বিদ্যুত পোল সরানো তাদেরকে ভয় ধরিয়ে দেয়। তাছাড়া রকিব উদ্দিন তার দলবল নিয়ে রেলের জমিতে লাগালো আখ দুইবার করে কেটে নষ্ট করে দেয় বলেও তাদের অভিযোগ।
ভক্সপপ: বাবু চৌকিরি, স্থানীয় ব্যবসায়ী ।
৭৩ সাল থেকে বাজারে ব্যবসা করে আসাছি। আসে জানতাম যে ওদের লিজ নেয়া জায়গা। এই জমির উপর যারযার মতো ঘর করে নিয়ে ব্যবসা করে আসছি। ওদেরকে নিয়োমিত ভাড়া দিয়ে আসছি। দীর্ঘদিন পর ওরা জমি বিক্রি করতে চায়। আমাদেরকে সরে যেতে বলে। এই জমির উপর বিদ্যুতের পোল ছিলো। জমির দাম বাড়ানোর জন্য পোলগুলো সরালো। আমাদেরকে উচ্ছেদের কথা বললে কাগজ পত্র দেখে বুঝতে পারি রেলের সম্পদ। ... তারপরও ওরা আমাদের আখ লাগানো ছিলো একবার রাতে এবং একবার দিনের বেলা প্রকাশে আখ কেটে দিয়েছে।
ব্যক্তি মালিকানায় জমির দাবি। এক এক সময়ে জমির একেক রকম মূল্য নির্ধারণ। পট করে জমি বিক্রির উছিলা। তারপর দোকানীদের উচ্ছেদ নোটিশ। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীদের আতঙ্কিত করে তোলে।
ভক্সপপ:একরামুল হক, স্থানীয় ব্যবসায়ী।
সাইবোড টাঙ্গানো হয়। ১লাখ ৪০ হাজার টাকা করে শতক। পরে ১০ শতক করে পট করে বিক্রির কথা জানায়। দাম ধরা হয় ২লাখ ৪০ হাজার টাকা করে শতক ধরা হয়।
মুন্সিগঞ্জ ভূমি সূত্রে জানা যায়, ১৯২৭ সলের সিএস-১ খতিয়ানে আছে ভারত সম্রাট গড়গড়ি রেলওয়ে পরিত্যক্ত জমি। ১৯৬২ সালে আরএস ৭৯৩ এবং এসএ ৪ খতিয়ানে বোরহান উদ্দিনদিগর নাম রেকর্ডভুক্ত হয়।
সিংকঃ মোঃ আমজাদ হোসেন, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, মুন্সিগঞ্জ, আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা।
চলতি বছরে রেলের প থেকে রেকর্ড সংশোধনি মামলা করা হয়েছে। তবে বোরহান উদ্দিনের উত্তোরসুরিরা মনে করেন এ মামলায় তাদের জিত হবে। কেননা তাদের কাছে সকল কাগজপত্র মজুদ আছে। কেননা রেলের কর্মকর্তারাও এ জমি তাদের বলে আভাস দিয়েছেন।
ভক্সপপঃ বোরহান উদ্দিনের বড়ছেলে রোকন উদ্দিনের বড় ছেলে জানান
বাংলদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার কর্তৃক সরবরাহকৃত তথ্য ও উপাত্ত থেকে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা¯— মুন্সিগঞ্জ রেল স্টেশনের জমি প্রথম ল্যাÊ রিকুইজেশন করা হয় ১৯০৪ সালে। যা পরবর্তিতে ৭ জুন ১৯৭১ ও ২৫ নভেম্বর ২০০৩ রিভাইস করা হয়। এই পানের কোনটিতেই উলেখিত জমিটি দখল, ব্যবহার, অধিগ্রহন এমনকি তাদের কোন খসরাতেও এর কোন নমুনা নেই। হরিস কেশ বিশ্বাসের নিকট থেকে ১৯৫৪ সালের ২ আগস্ট হাজী বোরহান উদ্দিন আহম্মেদের কাছে বিক্রি করেন। আর এস ও এসএ রেকর্ডভূক্ত হয়। যা আমরা বর্তমানে উত্তরসুরি হিসেবি ভোগদখল করছি।